
কক্সবাজার জেলায় বেড়েছে সড়ক দুর্ঘটনা। ২০১৭ সালে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৬৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৯ জন নিহত হয়েছে। এতে আগত হয়েছে শতাধিক মানুষ। যা ২০১৬ সালের তুলনায় অনেক বেশী। এতে সবচেয়ে বেশী সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে রামু ও চকরিয়া উপজেলায়। বেশীর ভাগ দুর্ঘটনা হয়েছে অদক্ষ চালকের কারণে।
কক্সবাজার ট্রাফিক বিভাগের এ.এস.পি (সার্কেল) বাবুল চন্দ্র বণিক জানিয়েছেন, চালক এবং গাড়ির ফিটনেসের ব্যাপারে ট্রাফিক পুলিশ কঠোর অবস্থানে আছে।
হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার আজিজ নগর থেকে খুটাখালী ইউনিয়নের নতুন অফিস পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তিন বছরে এসব স্থানে ৫৫টি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ১০৭ জন। আহত হয়েছেন অন্তত ৪০০ জন। এ ছাড়া কোনো লোক মারা যায়নি এ রকম দুর্ঘটনা ঘটেছে অন্তত ২৫০টি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের ২৯ তারিখ পর্যন্ত কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের গয়ালমারা এলাকায় ১১টি, বরইতলী ইউনিয়নের বানিয়ারছড়া ঢালা এলাকায় ৯টি, ডুলাহাজারার মালুমঘাট, চকরিয়া পৌরসভার মৌলভীরকুম, খুটাখালী ইউনিয়নের নতুন অফিস ও খুটাখালী বাজার এলাকায় তিনটি করে এবং ফাঁসিয়াখালীর হাঁসেরদীিঘ, ডুলাহাজারার সাফারি পার্ক ও হারবাংয়ের ইনানী রিসোর্ট এলাকায় ২টি করে দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনার প্রতিটিতে প্রাণহানি হয়েছে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের দুর্ঘটনা প্রবণ মোড় হচ্ছে আজিজ নগর উত্তর গেট মোড়, বরইতলী রাস্তার মাথা, এলাকা, চকরিয়া কলেজ মোড়, মালুমঘাট ছগিরশাহ কাটা, দরগাহ গেট, খুটাখালী মেধাকচ্ছপিয়া ঢালা, নাপিতখালী খেলার মাঠ মোড়, ডুলাফকির মোড়, পানিরছরা, গুচ্ছগ্রাম, সদরের খরুলিয়া আলাউদ্দিনশাহ দরগাহ এলাকা, খরুলিয়া সমিল এলাকা ও বাংলাবাজার। কক্সবাজার শহরেও এক বছরে ৪ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ মোড় হচ্ছে বিসিক, পানের ছড়া, রাবেতা, মরিচ্যাবাজার, উখিয়া বাজার, বালুখালী, উলবনিয়া, খঞ্জরপাড়া, নয়াপড়া, লেদা, জাদিমুরা ও নয়াবাজার। এসব মোড়ে দুর্ঘটনা ঘটে বেশি। মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও পেকুয়াতেও সড়ক দুর্ঘটনায় ৮ জন নিহত হয়েছে।
কক্সবাজার সোসাইটির সভাপতি কমরেড গিয়াস উদ্দিন বলেন, কক্সবাজারে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সেন্টার নেই। অশিক্ষিত চালকের কারণে প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। ফিটনেসবিহীন যানবাহন ধরার ক্ষেত্রেও ট্রাফিক পুলিশকে কাজ করতে হবে। ম্যাজিক, মাহিন্দ্রা, সিএনজি অটোরিকশা ইত্যাদি গাড়ির অধিকাংশ নম্বরবিহীন। এসব গাড়ি চালান অদক্ষ চালকেরা। তিনি আরও বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ মোড়ে সাইনবোর্ড স্থাপন, প্রশিক্ষণ ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স না দেওয়া, চালকদের সচেতন করতে এলাকাভিত্তিক ভিডিও প্রদর্শনীর ব্যবস্থার উদ্যোগ নিলে দুর্ঘটনা কমতে পারে।
আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কক্সবাজার জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামাল আজাদ বলেন, সব চালক অদক্ষ নন। মূল সমস্যা ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকগুলোতে সতর্কতার সাইনবোর্ড না থাকা। ফলে জেলার বাইরে থেকে আসা চালকেরা বাঁক বুঝতে পারেন না, তাঁরা দুর্ঘটনায় পড়েন। তবে তিনি চালকদের প্রশিক্ষণ না থাকার কথা স্বীকার করেন।
পাঠকের মতামত